Sylvie's Love (2020)
৯২% ইতিবাচক (রেটিংঃ ৭.২/১০) - সমালোচক
৭৯% ইতিবাচক (রেটিংঃ ৪/৫) - দর্শক
মেটাক্রিটিকঃ ৭৪/১০০
আমার গ্রেডিংঃ A-
সিলভির রবার্টের সাথে পরিচয় ৫ বছর আগে বাবার রেকর্ড স্টোরে। এক সুদর্শন যুবক কাজের সন্ধানে এসেছিল একদিন, সিলভি ভেবেছিল তাদের লোকের দরকার নেই। কিন্তু তার বাবা তাকে দেখতেই নিয়ে নিল। সিলভি জানতো না, ছেলেটা তারই মত সঙ্গীতের অনুরাগী। হাস্যকর হচ্ছে, ছেলেটার ধারণা ছিল, মেয়েদের দৌড় ওই টিভি দেখা পর্যন্তই। সিলভির ভালো লেগেছিল, সে রবার্টকে শুধু অবাকই করেনি, তার হৃদয়ে স্থান পেয়েছিল। না হলে জ্যাজ ক্লাবে তার স্যাক্সোফোন শুনে নিজের বাগদানের কথাও ভুলে যেত না। তাই নির্দ্বিধায় গদ্গদ হয়ে বলে ফেলেছিল, জন কোলট্রেনের সমতুল্য হতে তোমার বেশি দেরি নেই। যদিও সে আমলে অধীনস্ত কাউকে খোলাখুলি প্রশংসা করাটা মেয়েদের শোভা পায়না।
না সিলভির ভালো লেগেছিল রবার্টকে। মন থেকেই...
তাদের প্রথম ডেটের পর বান্ধবীর "কেমন ছিল" প্রশ্নেও তার সপ্রতিভ উত্তর- "Extraordinary"।
ষাটের দশকের হার্লেমে আফ্রিকান নিগ্রোরা শুধু বর্ণবাদের আন্দোলন করেই তিলে তিলে এগিয়ে যায়নি, বাকি দশটা মানুষের মত তারাও প্রেমে পড়ত। তাদেরও কাউকে দেখে ডেট করতে ইচ্ছা হতো। ডেট শেষে Goodnight kiss না পেলে আঙিনা ছেড়ে যেতে মন চাইতো না। ভালোবাসায় সেকালের চাকরিওয়ালা ছেলেদের সাথে সংগ্রামী শিল্পীদের হেরে যাওয়ার ইঙ্গিত দিলেও মুভিটা কখনোই সনাতন পথে হাঁটে নি।
ক্যারিয়ার, পরিবার, পরিস্থিতির কবলে পড়ে প্রেম পরিণতি পায় না, বলে প্রেম কি চলে যায়? জীবন অনেক লম্বা, পৃথিবীটা ছোট। কোথাও না কোথাও দেখা হবেই। এমন গল্প নিয়ে কত না ছবি হয়েছে। তবু, Sylvie's Love যেন সততা ও অসামান্য দক্ষতার সাথে সময়টাকে দেখিয়েছে, যেখানে নিগ্রোদের বর্ণবাদীতা মূল উপপাদ্য নয়। সেকালের নারীদের কর্মক্ষেত্রে চুপিসার অগ্রগতিও দেখায়। যেখানে পুরুষরা মেয়েদের শুধু ঘরের আসবাব না, মনেপ্রাণে ভালবাসতেও জানে।
হ্যাঁ, তখনকার নিপীড়ন, অন্যায় অবিচার এখানে সেভাবে দেখানো হয়নি। তাতে কী? Sylvie's Love শুধু দু'জন মানুষের কাছে আসা, ভালোবাসা, পারিপার্শ্বিকের সাথে তাদের মানিয়ে চলতে নেয়া সিদ্ধান্ত, যেখানে অন্য কারো হস্তক্ষেপ নেই - চমৎকার পিরিয়ড ডিটেইলিং এর সাথে দেখিয়েছে। টেসা থমসনকে এতদিন বিভিন্ন মুভি-টিভি শো'তে শক্তিশালী নারীর পার্শ্ব চরিত্রে দেখে অভ্যস্ত ছিলাম। তার ভার্সেটালিটির জানান আরও দারুণভাবে পেলাম এই রোম্যান্টিক চরিত্রে। তার চালচলন চুম্বকের মত আটকে ধরে রেখেছে এখানে। আরেকজন ব্ল্যাক নারীর প্রতি প্রায় ক্রাশ খেলাম অনেকদিন পর।
সাথে রবার্ট চরিত্রে অভিনেতাটাকে বড় কোথাও খুব ছোট চরিত্রে দেখেছি যেন। এখানে তাকে টেসার কাছে শুরুতে বড় ফিকে লাগছিল না। তবে সময়ের সাথে সাথে তার ব্যক্তিত্বের মাঝে কুল কিছু পাই, যা এই চরিত্রের জন্য পারফেক্ট। তাছাড়া মুভিটা তো সিলভিকে নিয়েই। সিল্ভির লাভ।
প্রোডাকশান ডিজাইনের পাশাপাশি আবহ সঙ্গীত, বিশেষ করে গানগুলা ওয়াও! ফ্র্যাঙ্ক সিনাত্রা, ন্যান্সি উইলসন, জ্যাজি মিউজিকের ব্যবহার পুরাটা সময়ে ভাসিয়েছে ন্যারেটিভে। La La Land এর ভাইব এত বেশি করে অনেকদিন পাইনি।
ভ্যালেন্টাইন সময়ের জন্য সেরা, না হলেও প্রেমিক প্রেমিকাদের জন্য একসাথে দেখার জন্য চমৎকার একটা মুভি। আমাজন প্রাইমে পাবেন।
রটেন টোম্যাটোজেঃ
0 Comments