মুভি: জানোয়ার

মুভি: জানোয়ার

রানটাইমঃ ১ ঘন্টা ১৭ মিনিট
পরিচালকঃ রায়হান রাফি
পার্সোনাল রেটিং: ৯.৫/১০





২৩ এপ্রিল ২০২০ সালের রাতে গাজীপুর উপজেলার এক এলাকায় নিজ বাড়িতে একই পরিবারের চারজনকে অমানবিকভাবে গলাকেটে হত্যা করেছিল কিছু দুর্বৃত্তরা।
এই চারজনের মধ্যে ১০ বছর এবং ৮ বছরের শিশুও বিদ্যমান ছিল। তার ওপর পুলিশি রিপোর্ট অনুযায়ী ওই পরিবারের মা ও দুই মেয়েকে পালাক্রমে অনেক বার ধর্ষণ করা হয়েছিল।
যে ঘটনাটি পুকুরে বললাম এটি একটি বাস্তব ঘটনা এবং এই ঘটনার উপর ভিত্তি করে রায়হান রাফি পরিচালিত ওয়েব প্ল্যাটফর্ম এ “জানোয়ার” মুক্তি পেল।
গল্পের দ্বিতীয় অংশ যাওয়ার আগে অবশ্য
যদি হৃদয় দুর্বল হয়ে থাকে তাহলে দয়া করে মুভিটি দেখবেন না রাতে দেখতে বসলে সারারাত ঘুম হবেনা নিশ্চিত। এতটাই রিলিস্টিক বর্ণনা তুলে ধরেছেন পরিচালক রায়হান রাফি। এই মুভিতে সত্যি বলতে যে কোন মানুষকে মানসিকভাবে প্রচন্ডরকম আঘাত দেওয়ার সকল কিছুই রয়েছে এই মুভিতে।
এবার অভিনয় এর কথায় আসি। অভিনয় সবাই মন দিয়ে করেছে। পুলিশ অফিসার এর চরিত্র তাসকিন রহমান এর অসাধারণ স্টোরি টেলিং এবং এক্সপ্রেশন গুলো আমার কাছে দারুণ লেগেছে।
এছাড়া অন্যান্য অ্যাক্টর যেমন রাশেদ মামুন অপু, জামশেদ শামীম, রাহুল, ফরহাদ লিমন সবাই জানোয়ার রুপি চরিত্র খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
এমনকি শিশু অভিনেত্রীর অভিনয় আমার কাছে দারুন ভালো লেগেছে তার এরকম মনমুগ্ধকর অভিনয় আপনাদের সবাইকে অবাক করবে নিশ্চিত।
সাধারণত আমাদের দেশের মুভিতে এক্সপ্রেশন নিয়ে অনেক সমস্যা দেখা যায় অনেক পরিচালক এক্সপ্রেশন সুন্দরভাবে স্ক্রিনে প্রেজেন্ট করতে পারেনা কিন্তু এই মুভিতে এমন কোন কিছুই চোখে পড়েনি।
যদি কারিগরি দিকের কথা বলি তাহলে অবশ্যই স্টরি এর কথা বলব। মুভিতে যে চরিত্রগুলো গল্প বলেছে তাদের প্রত্যেককে অনেক সুন্দর টেকনিক করে ফ্ল্যাশব্যাকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন পরিচালক। আসলে শুরু থেকে আমি নিজেই বুঝে উঠতে পারিনি যে কি হচ্ছে কিন্তু একপর্যায়ে এসে সবকিছুই পানির মতন ক্লিয়ার হয়ে যাবে।
এছাড়া পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক পারফেক্ট লেগেছে। যদিও সেট বাড়ির ভিতরে করা হয়েছে তারপরও লাইটিং গুলো আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে জাস্ট অসাধারণ, ঠিক একদম সাধারণ বাড়ির মত।
নৃশংসতা একেবারে বাস্তব এর মত ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক যা দেখে অনেকের সহ্য করা কঠিন হয়ে যাবে।
সবশেষে একটা কথা বলতে চাই যারা ইমোশনালি উইক বা হৃদয় দুর্বল তারা এই মুভিটি দেখবেন না। 3-4 ঘুমাতে পারবেন না।
সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত এই কথাটা যখন আপনার মাথায় চলে আসবে তখন নিজেকে সামলে রাখতে পারবেন না।
আমার নিজেরই শেষের দশ মিনিট দেখতে অনেক বেশি কষ্ট হয়েছে। সত্তিকারের ওই রাতের ভয়াবহতা অরিজিনাল ফুটেজ দেখছি এমনটা মনে হয়েছে।



Post a Comment

0 Comments